খোঁজ করুন

Sunday, April 3, 2016

                    একলা দোকলা
একলা থেকে দোকলা হয়ে
শ্বশুরঘরে যাই
মনের ইচ্ছা গোপন রাখি
সুযোগ খুঁজি তাই ।
দেবর ননদ শ্বশুর আছে
আপন ভাবি নাই
ওকেই কেবল আপন ভাবি
কী যারপরনাই !
মওকা পেলে নিজেই রাঁধি
দুজন মিলে খাই ।
উল্টে বলি পাড়ার কানে
লোকেও ভাবে তাই ।
কিসের শ্বশুর কিসের ননদ
স্বামীই আপনজন
দুজনেই তো কামাই করি
জমবে বেশি ধন ।
ফালতু বোঝা বহন করা
এই যুগে কি সাজে !
জমলে টাকা বাড়িগাড়ি
তখন দেবে কাজে ।
আজকে না হয় দুজন আছি
কালকে তো আর নয়
যুগের সাথে তাল মিলিয়ৈ
এটাই এখন হয় ।

Friday, February 24, 2012

টিয়া

লালটুকটুকে ঠোঁটখানি তোর সবুজবরণ গা
তোকে দিলাম লঙ্কাপাকা এই যে চ খা ;
গবগবাগব পুরিস মুখে তোর লাগেনা ঝাল ?
একটুখানি মুখে দিলেই আমার যে কী হাল !
বাঁকা ঠোঁটে তীক্ষ্ণ সুরে কী করে দিস শিস
লক্ষ্মী টিয়া শিস দেওয়াটা শিখিয়ে আমায় দিস ,
লোকের কথা শুনে শুনে নকল করিস ভাই
সেই বিদ্যে সবার আগে শিখতে আমি চাই ।
কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে দেব খোসা ছাড়াই খাবি
কথা দিলাম এখুনি এক পাকা কলাও পাবি ।
টি টি করে ডাক ছেড়ে ভাই শিস দিয়ে তুই ডাক
তোরই কাছে বনের টিয়া শিসটি শিখে যাক ।

Tuesday, March 22, 2011

শীতের ছড়া


শীতটা তো কম নয়
পড়ছে বেশ জাঁকিয়ে
কনকনে উত্তুরে
হাওয়া দেয় কাঁপিয়ে
জবুথবু রোদ্দুর
ঘোরে না আর দাপিয়ে ।
ফুলেদের শীত নেই
তাই তারা হাসছে
হাঁসেদের ভয় নেই
তাই জলে ভাসছে ।
অনুতাপ নেই কোন
ঝর্ণা কি পাহাড়ের ।
প্রকৃতির মাঝে তবু
সজ্জা কী বাহারের ।

Tuesday, January 25, 2011

কবিতা


কবিতা - জামাল ভড়

Dolchhutকবিতা তুমি তো নও কেবলই এক

স্বচ্ছন্দে বয়ে চলা খরস্রোতা নদী

কবিতা তুমি তো নও কেবলই এক

আশিরপদনখ বিভূষিতা দয়িতা ।

তুমি তো নও শ্যামাঙ্গীর তির্যক চাহনি

কিংবা উদ্দাম ঝঞ্ঝার বৈশাখী তাণ্ডব

অথবা প্রখর তাপে ধুসর ঊষর

যেখানে নিসর্গও অবগুণ্ঠিত হয় ।

কবিতা তুমি এক পাহাড়ী নির্ঝরণী

পাশে ছুটে চলা এক চপলা হরিণী

তুমি বিষণ্ন হৃদয়ে প্রবোধদায়িনী

তব লাবণি-বানে সহসা প্লুত আমি

তুমি জ্যোৎস্নালোকে বসে থাকা চকোরী

চকোর আমি — তুমি সত্যিই মনোরঞ্জিনী ।



Thursday, January 13, 2011

বাঁচি ছেড়ে হাঁফ


                                            কালকে রাতে ঘুম ভেঙেছে হঠাৎ কিসের ডাকে
                                            তাকিয়ে দেখি দাঁড়িয়ে কে যে দুই গরাদের ফাঁকে
                                            ড্যাবড্যাবিয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে চোখ
                                            ভেবেছিলাম হয়তো বুঝি অচেনা এক লোক ।
                                            লোকটা কোথা ? দাঁড়িয়ে সেথা একটা পাজি শেয়াল
                                            যেই ভেবেছি তাড়িয়ে দেব হঠাৎ এলো খেয়াল
                                            লাঠি কোথায় ? তাড়াই কিসে ? রাত যে এখন দুপুর !
                                            দুচোখ মুছে তাকিয়ে দেখি আমার পোষা কুকুর
                                            দুইপা তুলে দাঁড়িয়ে আছে সজল করুণ চোখে
                                            ভাবছি যখন দরজা খুলে জড়িয়ে ধরি বুকে
                                            আস্ত কুকুর মেকুর হয়ে বাইরে দিল লাফ
                                            স্বস্তিতে শ্বাস ফেলে তখন বাঁচি ছেড়ে হাঁফ ।

Monday, January 10, 2011

দুই শিয়ালের গল্প

 দুই শিয়ালের গল্প
     জামাল ভড়                      
রাতদুপুরে একটা শেয়াল
ডাকলো হেঁকে হুক্কা হুয়া -
পাশের শেয়াল ঘুমিয়ে ছিল
বললো উঠে , কেয়া হুয়া ?
পয়লা শেয়াল বললো তখন ,
দেখে এলাম পালবাবুদদের
মুর্গিরাখার খুপিখানি
হাট করে দোর খোলা ফের ।
লাফিয়ে বলে পাশের শেয়াল ,
আভি হামি যাতা হ্যায় ।
পয়্লা শেয়াল বললো তাকে ,
লেকিন বঁহা কুত্তা হ্যায় ।
চলনা ইয়ার , ঘুরেই আসি--
বললো আবার পাশের শেয়াল ;
পায়ে পায়ে গিয়ে দেখে
কুকুর যেন মস্ত দেয়াল ।
দ্বিতীয় শেয়াল হামা দিয়ে
একটু গেল যেই এগিয়ে
কুত্তাখানা ছুট্টে এসে
ধরলো পায়ে কামড় দিয়ে ।
তাইনা দেখে পয়লা শেয়াল
লাফটি দিয়ে ছুটলো বেগে ;
অতি লোভে তাঁতি মরে--
পিছু ফিরে বললো রেগে ।

কোলকাতা

     কোলকাতা
                জামাল ভড়
ক্যালকাটা  কেটে দিয়ে কোলকাতা লিখেছি
নাম দিয়ে ষোলআনা বাঙালী যে হয়েছি
       মহত্বের মহিমায়
       বীরত্বের গরিমায়
গলা ছেড়ে খুশিমনে হিন্দিগান ধরেছি
                   
বাংলার কোলকাতা বাংলাটা লেখেনা
ভিন্-ভাষায় কথা বলে বাংলাটা বলেনা
       সেই বীরপুরুষেরা
       চিরস্মরণীয়রা
লেখাপড়া জানে বটে বাংলাটা পড়েনা
                 
লোক বাড়ে কোলকাতায় বাঙালীরা কমছে    
চারিদিকে কলেবরে ফুলে ফেঁপে বাড়ছে
       ব্যবসাটা অবিরত
       বেওসা”-তে পরিণত
তবু ভালো আজকাল বাঙালীরা জাগছে





     

Sunday, January 9, 2011

ভালোবাসা

      ভালোবাসা
                  জামাল ভড়
ভালোবাসা তো ফুচকা নয় যে
আলুসেদ্ধর সাথে তেঁতুলগোলা জল
মিশিয়ে খাবে ; ভালোবাসা ঠিক কাঠি-আইসক্রিমও
নয় তারিয়ে তারিয়ে চুষে চুষে খাওয়ার ;
ভালোবাসা হৃদয়-মার্কা রঙীন ফানুসও নয়
হাওয়ায় ভরে উড়িয়ে দেওয়ার ;
ভালোবাসা বিশ্বকর্মাপুজোর দিন
ওড়ানো কোন বর্গাকারের ঘুড়িও নয়
যে গোত্তা খেতে খেতে উপরে উঠবে
কিংবা মাঞ্জাদেওয়া সুতো ছেড়ে
কাটাকাটি খেলায় মাতবে ।
ভালোবাসা তো সাপলুডো কখনই নয়
যে সাপের মুখে পড়লে নামবে ।
ভালোবাসা এক মূল্যবান অনুভূতি 
হৃদয়ে যার সম্যক উপলব্ধি ।      

Thursday, January 6, 2011

বীরভোগ্যা বসুন্ধরা

       বীরভোগ্যা বসুন্ধরা
                        জামাল ভড়
সামনের দিকে দ্যাখো
ওঁরা তো দৌড়ে অনেক এগিয়ে
জন্মেই জুটেছিল মুখে সোনার চামচ ;
তোমাদের কথা ওঁদের ভাবায়
তাই উড়ে উড়ে বেড়ান
দ্যাখো না গরম পড়লেই
এদেশ থেকে ওদেশ
যেন বসুধৈব কুটুম্বকম্‌ ।
                   
ডানদিকে তাকাও
এঁরা দক্ষিণমুখী
ডান-বরাবরই হাঁটেন
জনতাকে মেল-বন্ধন করে
রাজধানীতে যান
নব শতাব্দীর উদ্বোধন করেন
লাল বিপ্লবী জুজুর ভয়ে
সবুজ বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি দেন ।
                         
এবার বামদিকে দ্যাখো
বামদেববাবুরা কেমন আছেন
ডানমুখী জনতাকে কেমন ডাং-ধারী করে
দাবিদাওয়া আদায়ে সোচ্চার করে তুলেছেন
আর এদের দুঃখে ব্যথিত বলেই
মাটির দাওয়া ছেড়ে নিরালায় বসে কাঁদেন
আর বঙ্কিমবাবুর রামা কৈবর্ত ও হাসিম সেখেরা
যে তিমির সেই তিমিরেই ।

কাক

তুমি যখন ভোরের সূচনা কর
আমি তখন রজনীকে শেষবারের মতো
আলিঙ্গন করি
সুখভোগের ক্লান্তিতে অবসন্নতা ঢাকি ।
তুমি ইলাকে কলুষমুক্ত করার ইচ্ছায়
সূত্র-সন্ধানে বিচরণ কর
আমর আঙ্গিনায় , খোলা বারান্দায় ,কার্নিসে
সড়কে অলিন্দে মাঠে ঘাটে বাটে ;
সবাই যখন পোষ্য পালনে অক্ষমতা ঢাকে
অন্যপথে হাঁটে
তুমিই তখন নিজের উষ্ণতা দিয়ে
আর কাউকে চোখ ফুটিয়ে দাও ---

প্রেম

প্রেম
জামাল ভড়
তুমি তখন সবে ষোল পেরিয়ে
একাদশ দিয়েছ । তোমাকে দেখেছিলাম
একদিন কফি হাউসের এককোণে
তোমারই বয়সী আরও তিনজনে
ছিল তোমাকে ঘিরে সিফন চুড়িদারে ।
চোখে চোখ পড়েছিল কিংবা দেখেছিলে ফিরে
আর তখনই ওস্তাদ জাকিরের মরুঝড়ের
লহরী উঠেছিল বুকে ; সঙ্গতে ছিল
পণ্ডিত রবিশংকরের তনামনা --
আজ মধ্যচল্লিশেও সেই দ্বৈতসুরের
মূর্চ্ছনা শুনি বাতাসে কান পেতে ।

Friday, December 31, 2010

সৃষ্টিসুখের উল্লাসে

আমি কিছু লিখি তখনই
যখন কোন সাঁতারু কোন নদীতে
কাটে সাঁতার, দেয় ডুব
পানকৌটির, করে খেলা অবহেলায় ---
আমি কিছু লিখি তখনই
যখন চাষী ভূমিরূপ দেয়,
বীজ বোনে, ফসল তোলে
গায় আনন্দে গান ---
আমি কিছু লিখি তখনই
যখন কোন শিল্পী ছবি আঁকে
উল্কিরূপে মসৃণ ক্যানভাসে
নানাভাবে দশ আঙুলে ---
তখন কবিতা আমার
সম্ভোগের তৃপ্তি আনে
মন ভাসায় সৃষ্টিসুখের উল্লাসে ---

স্টিভ আরউইন

তুমি তো কুমিরশিকারী নও
তবুও লোকে তোমায় ঐ নামেইে চেনে
কুমিরকে ভালবেসে কুমিরের কাছে এসে
তাদের সুখ দুঃখের শরিক হয়েছ
শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে নিজেকে বাজি রেখে
তুমি কুমিরকে খাইয়েছ -- আমরা দেখেছি --
অশান্ত গোক্ষুর কিংবা র‌্যাটল স্নেক
তোমার চোখ ও হাতের ইশারায় বশীভূত ---

তবু তুমি নিমজ্জিত টাইটানিকের মতো
টাইটানিকের আয়স-অবয়ব
কঠিন জলের অভিঘাতে বিচূর্ণিত
তুমিও তেমন আপাদমস্তক
আপাতনিরীহ স্টিং রে-র পুচ্ছাঘাতে
টাসমানিয়ার উপকূলে জলতলেই শায়িত।

টুনটুনি

সপ্তসুর

পরিবর্তন

তোমরাই এনেছিলে পরিবর্তন কয়েক দশক আগে
বলেছিলে উন্নয়নের বান ডেকে যাবে
ভূমিহীনরা পাবে ভূমি
গৃ্‌হহীনরা গৃহ, রইবে না কোন খেদ
ভূস্বামীদের কমে যাবে মেদ
সে-সব তো হয়নি কিছুই
বরং হে গরিব-দরদি নেতারা
য়ারা স্বাধীনতাকেও স্বীকার করনি
বলেছিলে ঝুটা আজাদি
বুর্জোয়াদের কবি রবি
নেতাজি তোজোর ---
তোমাদের মুখোস গেছে খসে
জনগণ গেছে সরে
ফিরিয়ে নিয়েছে মুখ
দুরুদুরু কাঁপে তোমাদের বুক
পরিবর্তনের নাম শুনে
বরং হে প্র্রতিশ্র্রুতি-ভরা নায়কেরা
একবার নিজেদের দিকে তাকাও
একবার দেশের দিকে তাকাও
কি পেয়েছ আর কি পেয়েছে
হিসাব করো তার ---
ক্ষমতার অলিন্দে
ঠাণ্ডাঘরে বসে
তোমরা যত না বাড়িয়েছ নিজেদের মেদ
মিত্থা-আশ্বাসে জনতার বেড়েছে খেদ
তাই পরিবর্তনের হাওয়া
জনতার চাওয়া
---ভুল বুঝো না ওদের
ক্ষমা করো হে প্রভু
হে দেশভক্ত মহানায়ক ।


Friday, December 24, 2010

অপেক্ষা

অপেক্ষা
                   জামাল ভড়
সবাই কেমন ভুলে যাচ্ছে তোমায়
কই আমি তো পারছিনে
না-ভোলার যাতনায়
আমিই যে পুড়ে মরছি ;
বড়খোকা যে তুমি-অন্ত-প্রাণ ছিল
সেও , দেখি , এখন ভুলে থাকে
নানান কাজে অকাজে নিজেকে জড়িয়ে রাখে
মাঝে মধ্যে অবশ্য তোমার কথা বলে
কিন্ত সেও তো কম !
               
আর মেজখোকা যে তোমার
নীলশীতল দেহ ছেড়ে ওঠেনি
শিশুর মতন ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠেছিল
সেও দেখি এখন তোমার কথা
কত কম উচ্চারণ করে --
হয়তো সেও তোমাকে ভুলেছে
কিংবা নিজেকে ভুলিয়ে রেখেছে ।
                        
বড়খুকিটাও দেখি নিজের নাতিকে নিয়ে
কত ব্যস্ত ! অবশ্য তার নিজের শরীরটাও
তাকে কম যাতনা দিচ্ছে না !
হয়তো এই যন্ত্রণা সেই যন্ত্রণাকে
দূরে সরিয়ে দিয়েছে ।
                  
ছোটখোকা আর মেজমেয়ে
তারা তো যে যার সংসার নিয়েই রয়ে গেল
তোমার কথা ভাবার
তাদের যে সময়ের বড় অভাব ।
                    
ছোটমেয়ে যাকে তুমি অনেক দূরে
সংসার পেতে দিয়েছ
তাকে তো দেখিনে --মাঝে মাঝে
সে ফোন করে -- কথা বলে --
আমার শরীরের খবর নেয় -- আর
তোমার কথা উঠলেই
কেঁদে ফেলে টেলিফোনেই ।
                            
ছেলেমেয়ের মতো আমি যদি
তোমাকে ভুলতে পারতাম !
তুমি নেই -- একথা তো একবারও মনে হয়না
আজান শুনলেই মনে হয়
তুমি মসজিদেই আছ এখনও
এখনও জানো ভুল করে আয়না চিরুনি নিয়ে
দাঁড়িয়ে থাকি , তুমি ওজু সেরে চাইবে বলে
তোমার গামছাটা পাট করে
হাতের কাছে রেখেছি
তোমার টুপি , তোমার জায়নামাজ
তোমার তসবিহ্‌ আমার চোখের সামনে
প্রতি পলেই মনে হয়
এই বোধ হয় তুমি ডাকলে
আর এই ডাক শোনার জন্য
আমি আর কতদিন অপেক্ষা করব !
                                            

নজরুল

  নজরুল
           জামাল ভড়
সূর্যকেন্দ্রিক একদল গ্রহ
যখন আবর্তিত
সূর্যালোকে প্রতিভাত
তখন ধুমকেতুসম
তোমার আবর্ভাব
স্বয়ং সূর্যও অভিভূত  --
                       
আস্কন্ধলম্বিত চুল
কাজী নজরুল
আয়তনেত্রের একটাই নাম
কাজী নজরুল ইসলাম ।
                              
ফণিমনসার ঝোপে
বিষের বাশীঁতে বাজে ছায়ানটের সুর
চুরুলিয়ার সেই অগ্নিশিশু
বাজায় যখন অগ্নিবীণা
সাথে ভাঙার গান
তখন মরুভাস্বরেও
ফোটে দোলনচাঁপা
কিংবা ঝিঙেফুল
সন্ধ্যা নামার সাথেই
নতুন চাঁদ ঘিরে
ধেয়ে চলে আসে চক্রবাক
আমার চিত্তনামায়
জ্বলে প্রলয়শিখা
বহে ঝড়
মুক্ত জিঞ্জির আমি
সিন্ধুহিল্লোল মাঝে
গাহি সর্বহারার গান
কপালে আমার এক
নতুন চন্দ্রবিন্দু ।
                   

Thursday, December 23, 2010

মশা মারতে কামান দাগা


                জামাল ভড়
মশাটাকে মারতেই হবে
একটু যে ঘুমাবো তার জো নেই
সব সময় কানের পাশে সাইরেন ।
আলোটা জ্বালালাম
মশারীটা তন্নতন্ন করে খুঁজলাম ;
ভাবলাম - ব্যাটা বোধ হয় মরেছে
এলোপাথাড়ি চড়চাপাটিতে ।
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে আবার গেলাম ঘুমাতে ;
সবে লেগেছে তন্দ্রা
আবার শুনি পোঁ -- এবার আরও তীক্ষ্ণ ।
মেজাজ গেল খিঁচিয়ে
সব কটা বাতি দিলাম জ্বেলে
খানাতল্লাসি শুরু হয়ে গেল --
যেমন খুশি তেমনই চালালাম চড়চাপ্পড়
আপদ বিদায় ভেবে পড়লাম শুয়ে ;
অনেক কষ্টে সবে লেগেছে চোখ
আর ঠিক তখনই ঠিক চোখের পাতায়
বিনা সাইরেনে বেঁধালো শূল কিংবা ত্রিশূল ।
দাঁতে দাঁত চেপে উঠে পড়লাম বেগে
বিছানাশুদ্ধ মশারীটা দিলাম জ্বালিয়ে
ব্যাটা পুড়ে মরুক জন হাসের মতো ।

উপেনের সাথে দেখা

উপেনের সাথে দেখা
                     জামাল ভড়
সেদিন পথ চলতে চলতে আচমকা
একেবারেই আচমকা উপেনের সাথে দেখা
পরিপাটি চুল , হাসি হাসি মুখ
দেখে বোঝার উপায় নেই বয়স কত
আমি বললাম : কেমন আছ উপেন ?
বললে : বাবু আমি আর একা নই
যেদিকেই দেখি ঘুরে
রায়চক বারাসাত সিঙ্গুরে
সর্বত্রই আমি-তে ভরা ; বলা চলে
আমিত্বে ভরে গেছে দেশটা ।
শুধু বললেম : কেন ?
বললে : ওরা বললো হ্যানো হবে ত্যানো হবে
কত কী হবে যেন - আর -ওঃ প্রাচ্যের ম্যানচেষ্টার ।
আমার মতো এরাও বলেছিল :
জমি নিও না বাবু , হব সর্বস্বান্ত -
চৌদ্দপুরুষের জিরেতটুকুই সর্বস্ব -
খেটেখুটে খাই - কোনমতে দিনগুজরান করি -
তা ওরা বললে : চাষ তো ভাগাড়েও হয়
শিল্প , অনুসারী শিল্পের জন্য তো
জমি চাই -- শালিজমিই চাই
শিল্প তো আকাশে হয় না !
উপেন বললে আরও : আমার বাবু ছিল সেযুগে
পারিষদ ছিলকিছু -- আর এযুগের
বাবুকে তো দেখাই যায় না
শতশত বাবু একই চেহারার একই পোশাকের
ঠিক যেন হিটলারের মতো
কোন্‌টা আসল চেনাই যায়না !